মোকছুদ আহমদ প্রায় এক কানি জায়গায় বিভিন্ন ফসল ও ফলের চাষ করছেন। আম, কাঁঠাল, জাম, পেয়ারাসহ নানা জাতের ফলের গাছ রয়েছে তাঁর জমিতে। এখন এসব গাছের ফাঁকে ফাঁকে ভিন্ন পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছেন। এতে বাড়তি আয় হচ্ছে।
পেশায় কৃষক মোকছুদ আহমদের বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। একসময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে ছিলেন তিনি। এরপর দেশে এসে কৃষিকাজে মন দেন। প্রায় ৫০ ছুঁই ছুঁই মোকছুদ আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয় এক কৃষি উদ্যোক্তার পরামর্শে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো বস্তায় আদা চাষ শুরু করি। শুরুতে দুই হাজার বস্তা ছিল। বর্তমানে সেটি সাত হাজার বস্তায় দাঁড়িয়েছে। গত বছর আয় হয় প্রায় চার লাখ টাকা। এ বছর আয় আট লাখ টাকা ছাড়াবে।’
শুধু মোকছুদ আহমদ নন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে তাঁর মতো আরও ২৪ হাজার কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তা বস্তায় আদার চাষ করছেন। বছর তিনেক আগে চট্টগ্রামে এ পদ্ধতিতে আদা চাষ শুরু হয়েছে। প্রথম দিকে মানুষ তেমন আগ্রহী ছিলেন না। তবে পড়ে থাকা জমিতে কম পরিশ্রমে এ পদ্ধতিতে আদার চাষ করতে পারায় মানুষ এখন আগ্রহী হচ্ছেন। শুরুতে হাজারখানেক লোক চাষ শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে চাষির সংখ্যা ও উৎপাদন।
কৃষি কর্মকর্তা ও চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ পদ্ধতিতে প্রথমে বস্তায় পরিমাণমতো জৈব ও রাসায়নিক সার এবং বেলে দোআঁশ মাটি দিতে হয়। এর সঙ্গে দানাদার কীটনাশক মিশিয়ে দিতে হয়। একেকটি বস্তায় ২০ থেকে ২৫ কেজি মাটি দিতে হয়। পরে তাতে বীজ আদা রোপণ করতে হয়। একেকটি বস্তায় তিনটি চারা রোপণ করা হয়। প্রতি বস্তায় খরচ হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। প্রতি বস্তায় গড়ে এক কেজির মতো আদা পাওয়া যায়। প্রতি কেজি আদা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়।
মিরসরাইয়ের আরেক বাসিন্দা যিশু চৌধুরী তাঁর পুকুরপাড়ের পরিত্যক্ত জমিতে আদার চাষ শুরু করেন। গত বছর মাত্র ৫০টি বস্তায় আদার চারা রোপণ করেন। এ বছর তা ৫০০ ছাড়িয়েছে। যিশু চৌধুরী বলেন, এ পদ্ধতিতে আদার চাষ করলে বেশি পরিশ্রম করতে হয় না। শুরুতে বস্তাগুলো প্রস্তুত করে দিলে পরবর্তী সময়ে আর পরিচর্যার তেমন প্রয়োজন পড়ে না।