পাট জাগ নিয়ে বিপাকে ফুলবাড়ীর চাষিরা

Site Favicon প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০২৫ ১৬:১৯
A+A-
Reset

বর্ষার মৌসুমেও ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় পাট জাগ (পচানো) দেওয়া নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর চাষিরা। মাঠে, বিলে, ডোবায় পানি না জমায় তারা পাট জাগ দিতে পারছেন না। তাই কাঁটার উপযোগী পাট ফেলে রাখা হয়েছে মাঠে।

এর মধ্যে কেউ কেউ অন্যের পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কোনো কোনো কৃষক পাট কেঁটে দুই থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে বিভিন্ন ছড়ায় (জলাশয়) নিয়ে জাগ দিচ্ছেন। এতে তাদের অতিরিক্ত খরচ গুণতে হচ্ছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ফসলের মাঠগুলো ভেজা কিন্তু পানি জমেনি। ডোবাতেও তেমন পানি নেই। অনেক জমিতে পড়ে আছে কৃষকের পাট। তবে ধরলা, বারোমাসিয়া, নীলকমল নদী এলাকার আশপাশের কৃষকরা গত সপ্তাহ থেকে অল্প পাট কেঁটে জাগ দেয়া শুরু করেছেন।

বিভিন্ন এলাকার চাষিরা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত না হলে তাদের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। তবে প্রতিবছরই পাট জাগ দিতে নানান সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। এছাড়া উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, বাজারে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার মতো বাঁধা তো আছেই। পাট চাষে এসব সমস্যা বছরের পর বছর চলতে থাকলে অনেক চাষি পাটে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। তাই পাটের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।

Top Selling Multipurpose WP Theme

কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের পাট চাষি বদিউজ্জামাল বলেন, আধা বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পর্যন্ত বৃষ্টি না থাকায় দোলায় পাট জাগ দিতে পাড়ছি না।

উপজেলার গজেরকুটি এলাকার পাট চাষি কিশোব চন্দ্র রায় ও ধীরেন চন্দ্র রায় জানান, দুই তিন থেকে বৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু পাট জাগ তো দূরে থাক আমন ধানের জমিগুলোতে পানিই জমেনি। ফলে পানির অভাবে পাট কেঁটে ডোবায় জাগ দিতে পাড়ছি না।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদী এলাকার কৃষকরা কেউ কেউ পাট কাঁটতে শুরু করেছে। দুই তিন দিন থেকে কখনো হালকা, কখনো মাঝারি বৃষ্টিপাত হলেও ধানের জমি ও ডোবায় পানি জমেনি। তাই পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাঁটছে তাদের।

তবে সরকার যেহেতু পলিথিনমুক্ত দেশ গড়ে পাটের দিকে ঝুঁকছে তাই আগামীতে পাট শিল্পে বড় পরিবর্তনের প্রত্যাশা তাদের। এছাড়া কৃষকদের আধুনিক প্রশিক্ষণ দিয়ে পাট চাষে আগ্রহী করে তুলতে পারলে এ অঞ্চলে সোনালী আঁশ পাটের সুদিন ফিরে আসবে বলে জানান তারা।

Top Selling Multipurpose WP Theme

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নিলুফা ইয়াছমিন জানান, কৃষি বিভাগ সব সময় পাট চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছে। এজন্য চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এ বছর উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ৪৮০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা পাটের চাষাবাদ করেছেন।

তিনি বলেন, এর মধ্যে নদী এলাকার আশপাশসহ প্রায় ৭৫ হেক্টর জমির পাট জাগ দেয়া হয়েছে। যেহেতু বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হলে পাট চাষিদের পানির সমস্যা হবে না।

আপনার পছন্দ হতে পারে